OrdinaryITPostAd

বিভৎস আর ভয়ংকর লম্বা লম্বা পায়ে আমার দিকে আসতেছিল-Ghost Story:Nullblogger

 

ঘটনা যার কাছ থেকে শুনা আমি তার মতো করেই বলছি। সময়টা ২০০৬ সালের রমজান মাসের কোন একদিন। আমার নাম রশিদ আকবার, পেশায় একজন রিকশা চালক সারাদিন রোজা রাইখা রিকশায় প্যাডেল মারি দিন শেষে কেলান্ত হইয়া ইফতার আগ আগেই আমাদের কলোনিতে ফিরি। আমার জীবনে মেলা ভূত প্রেতের কিচ্ছা-কাহিনী শুনছি কিন্তু জীবনে দেখি নাই তাই বইলা বিশ্বাসও করতাম না। কিন্তু আমার স্বচক্ষে এ ঘটনা দেখার পর ভূত আছে এখন আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। যাইহোক আসল ঘটনা বলি-

 


 


সেদিন সেহরি খাইয়া রিকসা নিয়ে বের হমু তখনই পিছন থেকে বউ ডাক দিল আকাশের অবস্থা ভালো না আজ যেন না যাই, কি করার আমরা রিকশা চালক ঝড় তুপান যাই থাকুক পেট চালাতে বাইরে যাওয়া লাগবো, মন টানে না তারপরও রিকশা নিয়ে বের হলাম। যখন আমি রিকশা নিয়ে বাজারের কাছে গেলাম তখন একজন লম্বা হুজুর লোক আমার রিকশায় উঠলো কোথায় যাবে জিজ্ঞেস করলে কিছু বলে না শুধু বললো অনেক দূর কিহ যাবি তো? আমি মাথা নাড়ালাম টেকা দিলে আমি সব জায়গায় যাইতে রাজি। সেই সকাল থেইকা লোকটারে নিয়া ঘন্টার পর ঘন্টা রিকশায় প্যাডেল মারতেছি দেখি থামার কোন নাম গন্ধ নাই। একসময় প্যাডেল মারতে মারতে বিরক্ত হইয়া পিছনে ফিরা কই হুজুর আপনি যাবেন কই? লোকটা চোখ বড় বড় লাল করে বললো তোকে তো বলেছিলাম অনেক দূর পুরো রাস্তায় আর পিছনে ফিরবি নাহ। আমি মাথা সায় দিয়ে আর কিছু বললাম না। আমি সামনে দিকে রিকশা চালাচ্ছি পিছন থেকে দুরূদ, যিকির, সূরা তিলাওয়াত শুনতে পাচ্ছি খুব চিকন কন্ঠে আর মিহি সুরে যেন মধু আছে কন্ঠে! আমার ৩০-৩২ বছরে জীবনে এত সুন্দর তিলাওয়াত আগে কখনো শুনি নাই, একসময় আমার যেন ক্লান্তি কেটে গেছে আমি জোরে জোরে প্যাডেল মারতে থাকি রিকশা চলতেছে খুব জোরে, একসময় যোহরের আযান দিলে একটি মসজিদের কাছে হুজুর রিকশা থামাতে বলে। আমি আর উনি অযূ করে নিলাম নামাজের জন্য মসজিদের অনেক মুসল্লী এতো মুসল্লী মসজিদে আগে দেখি নাই সবাই লম্বা লম্বা সাদা জুব্বা ড্রেস পড়া। আর জায়গা টাও আমার অচেনা। সবাই হুজুরকে জায়গা করে দিলেন নামাজ পড়াতে উনি ইমামতি করলেন। আমি একেবারে পিছনে কাতারে দাঁড়ালাম। নামাজে ভিতরে আমি যেন তলিয়ে গেলাম এতো ভালো লাগা আগে লাগে নি। নামাজ শেষ করে রিকশায় উঠে পড়লেন এর ফাঁকে আর কোন কথা বলেন নাই শুধু একটা কথা বলতে শুনলাম “নামাজের মতো শান্তি আর কিছুতে নাই”

! আমি সেই আবার অনবরত প্যাডেল মেরে চলতেছি, মাঝে মাঝে রাস্তায় কোন মোড় আসলে উনি নির্দেশ দেয় ডানে বামে যাওয়ার জন্য। একসময় দুপুর ঘনিয়ে বিকেল হয় আমার শরীর ভাইংগা গেছে আর চালাইতে পারতাছিনা তখনি উনি বলে থাম এখানে। আমি রিকশা থামাই। এ কি এখানে তো কোন রাস্তাঘাট নাই,শুধু মাঠ,মাঠ আর মাঠ! আর মাঠের শেষের দক্ষিণে একটা সরু খাল আছে। হুজুর লোকটি রিকশা থেকে নেমে বললেন তুমি এখানে থাকো আমি আসতেছি। ভুলে ও আমার পিছে পিছে এসো নাহ। আমি বললাম আপনি যান কই? এখানে তো কিছু নাই। উনি শুধু হাত দিয়ে ইশারা করলেন রিকশায় বসে থাকতে উনি একটু বাদে আসতেছে। তারপর আমি উনার যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলাম উনি যত দূরে যাচ্ছে মনে হচ্ছে যেন তত বড় হচ্ছে আমি খুব ভয় পাই। একসময় উনাকে আর দেখতে পাই না। প্রায় ২০-৩০ মিনিট কাইটা গেলো কিন্তু হুজুরের আসার কোন নাম গন্ধ নাই। রিকশায় বসতে বসতে আমি চিন্তা করলাম এই লোকটা তো আমার ভাড়া ও দিল না কোন জায়গায় আইনা মাঠের মাঝখানে দাঁড় করাইয়া চলে গেছে, একসময় আমি খুব ভয় পাই চারিদিকে শুধু মাঠ আর আমি একা রিকশা নিয়া বইসা আছি এদিকে সন্ধ্যা হইয়া আসতেছে ক্ষুধা, ক্লান্তি, ভয় নিয়ে আমি রিকশায় জড়সড় হয়ে বসে আছি।তারপর আমি ভেবেনিলাম হয়তো এই লোক আর আসবে না। আশেপাশে মসজিদ পাইলে ইফতার কইরা মসজিদে কাটামু রাতটা। যেই ভাবা সেই কাজ অনেক্ক্ষণ খুঁজলাম কিন্তু মসজিদ তো দূরের কথা কোন মানুষজনও দেখা পাইলাম না। সন্ধ্যা হয়ে গেছে এতক্ষণে হয়তো ইফতারে সময় হইছে, আমি মাঠের শেষ প্রান্তে খালটার দিকে গেলাম পানি খাবো বলে। তখনি আমার জীবনের সেরা আজিব ঘটনা দেখলাম আমি দেখলাম যে-সেই হুজুর খালের পানির উপর ৪টা মহিলার সাথে দাঁড়াই আছে। ৪জন মহিলাই বোরকা গায়ে দেওয়া লাল,নীল,সাদা,কালো বোরকা পড়া। হুজুর মহিলাদের হাতে বাজারের ব্যাগের মতো কিসের ব্যাগ দিতেছিল তবে আমার মনে হয় ঐগুলা বাজারের ব্যাগ কিন্তু ১০০% সিউর নাহ কিসের ব্যাগ ছিল। আমি অজ্ঞান হয়ে যাবার মতো অবস্থা এটা দেখে যে পানির উপর মানুষ দাঁড়াইয়া আছে তখন মহিলা ওগুলা হঠাৎ আমাকে দেখে ফেললো। হুজুর পিছনে ফিইরা আমার দিকে তাকাইলো উনার মুখ কি বিভৎস আর ভয়ংকর লম্বা লম্বা পায়ে আমার দিকে আসতেছিল আর মহিলা গুলি বিশাল বিশাল সাপ হয়ে আমার দিকে আসতেছে। এটা দেখার পর আমি ওখানেই সেন্সলেস হয়ে পড়ে গেলাম। তারপর আর কিছু মনে নাই।


পরদিন সকালে চোখখুলে দেখি আমি আমার ঘরে শুয়ে আছি। আমার মাইয়া ডাকাডাকি করতেছে মা আব্বার জ্ঞান ফিরছে জ্ঞান ফিরছে! পুরা কলোনির সব্বাই আইসা জড়ো হইয়া গেছে আংগো ঘরে আমারে দেখবার লাইগা। তারা হোগলে বলাবলি করতাছে আমার নাকি আইজ ৩দিন জ্ঞান নাই। আমি আমার বউরে কইলাম আমি এখানে কিভাবে আইলাম। কইলো আমার সালায়ে আমারে নিয়ে আইছে ও রাংগামাটিতে গাড়ি চালায় তো ও মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে গেছে তখন মসজিদে আমারে পাইছে। আমি অচেতন হইয়া পইড়া আছি কে বা কারা আমারে রাইখা গেছে কিছু জানে না তারপর ও আমারে নিয়া আইলো!আর আমার কলোনি হইলো চিটাগং।


আমার সালা বড় হুজুর নিয়া আইছে হুজুর সবকিছু শুনে বললো এটা কোন নামাজি বড় জ্বীন অথবা জ্বীনের বাদশাহ ছিল, তোমার কোন ক্ষতি করতো না কিন্তু তুমি দেখে ফেলাতে এমনটি হইছে। আর জ্বীনের সাথে পানির উপর মহিলা গুলো জ্বীনের বউ অথবা তার আত্মীয় স্বজন ছিল। আমি দেখে ফেলার কারণে ভয়ংকর রূপ নিছে।
সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো আমি বাড়ি থেকে যখন সেহরি খেয়ে বের হইছি তখন আমার পকেটে ছিল শূণ্য টাকা। আর আমার সালাবাবু যখন আমাকে অচেতন অবস্থায় পায় তখন আমার পকেট ভর্তি প্রায় বার হাজার টাকা পায়!

এরপর থেইকা আমি রিকশা চালানো ছাইড়া দি জ্বীনের দেওয়া টাকাগুলা দিয়া আমাদের এখানে ছোট একটা হোটেল দি। আর আমার ছোট ওই হোটেল এখন চট্রগ্রাম জেলার বড় নামকরা একটা রেস্টুরেন্ট। আলহামদুলিল্লাহ।

লেখা-সাইফুল ইসলাম সান

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১