OrdinaryITPostAd

প্রবন্ধ’ বা ‘রচনা’ কী?

 


'রচনা বলতে গেলে ভাবের সাথে ভাব প্রকাশের উপায় দুটোকে সম্মিলিতভাবে বুঝায়; কিন্তু বিশেষ করে উপায়টাই লেখকের।' -রবীন্দ্রনাথ।

*রচনা : 

রচনা এক প্রকার শিল্পকর্ম। ছবি-আঁকা, গান-গাওয়া, নির্মাণ— এগুলো শিল্পকর্ম। ছবি আঁকতে গেলে রং ও রেখার দরকার; কিন্তু রং ও রেখাই ছবি নয়— তার অতিরিক্ত কিছু। ছবি আঁকার পূর্বে তোমাকে মনে মনে ভেবে নিতে হয়, তুমি কি আঁকবে। রঙে ও রেখায় আঁকার পূর্বেই তোমার মনে সে ছবি আঁকা হয়ে যায়। তেমনি গান গাইতে গেলে কথা ও সুরের দরকার; কিন্তু গান হল কথা ও সুরের অতিরিক্ত জিনিস। মূর্তি নির্মাণ করতে গেলে পাথর কিংবা বাশ, খড়, দড়ি, মাটির দরকার; কিন্তু মূর্তি হল তাদের অতিরিক্ত কিছু— পাথর কিংবা বাঁশ, খড়, দড়ি, মাটি মূর্তি নয়। রচনাও তেমনি বাক্য, তথ্য বা ঘটনার বিবরণ মাত্র নয়; এদের অতিরিক্ত অন্য কিছু। শিল্পকাজে যেমন পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা দরকার, রচনা-কর্মেও তেমনি দরকার পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতা।

*‘রচনা’র অর্থ : 

‘রচনা’ কথাটির অর্থ ‘বিন্যাস’ বা ‘সৃষ্টি’। বিন্যাস বলতে একটি নির্দিষ্ট ছাঁচে সাজিয়ে একটি সুন্দর কিছু গড়ে তোলা বোঝায়। যেমন— ফুলের তোড়া। নানা আকারের রং বেরঙের ফুল একটি নির্দিষ্ট ছাঁচে সাজিয়েই তো ফুলের তোড়া তৈরি করতে হয়। তখন আর এক-একটি ফুলের সৌন্দর্য আমাদের মনে বড় হয়ে ওঠে না; সমস্ত তোড়ার সৌন্দর্যটাই তখন আমাদের মন কেড়ে নেয়। এটি রচনারই গুণ। আর সৃষ্টি মানে, যা ছিল না তা গড়ে তোলা। শিল্পীকে একখানি পাথর দেওয়া হল। তিনি তা খোদাই করে মূর্তি নির্মাণ করলেন। ছিল পাথর, হল মূর্তি। এটিই সৃষ্টি।

*‘প্রবন্ধ’ বা ‘রচনা’ কী? : 

গল্প, কবিতা, নাটকের মতো প্রবন্ধও রচনা। কিন্তু বাংলায় ‘প্রবন্ধ’ বা ‘রচনা’ শব্দ দুটি সম অর্থে ব্যবহৃত হয়। ভাবের কথা বা জ্ঞানের কথা, চিন্তার কথা বা স্মৃতির কথা যখন গদ্যের আকারে লেখা হয় এবং পড়ে আনন্দ পাওয়া যায়, জ্ঞানলাভ করা যায়, মনে চিন্তা জাগায়, ভাব জাগায়, তখনই তা ‘রচনা’ বা ‘প্রবন্ধ’ হয়ে ওঠে। কোনো বিষয়ে সঠিক ও সুন্দরভাবে মনের ভাবকে প্রকাশ করে পরিচ্ছন্ন চিন্তা ও ভাব-ধারার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করাই প্রবন্ধ রচনার মূল লক্ষ্য।

সাধারণত প্রবন্ধ বা রচনার বিষয় বলে দেয়া হয়। যে বিষয়ে প্রবন্ধ লিখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কী জান প্রথমে চিন্তা কর। যা জান, একবার ভালো করে ভেবে নাও। অনেক কথা মনে আসবে। কিন্তু সব দরকার না-ও হতে পারে। যেগুলো দরকারি কথা সেগুলো একটি কাগজে বা খাতার পাতায় লিখে ফেল। তাদের মধ্যে কোনটি আগে লিখবে, কোনটি পরে লিখবে তা এবার ঠিক করে নেয়া দরকার। কিন্তু সবকিছুকে চাপা দিয়ে তোমার নিজের একটি মত বা ধারণা বা বিশেষ ভাবনা ফুটে উঠবে, বাক্য, তথ্য বা ঘটনার অতিরিক্ত কিছু। তোমার মত বা ধারণা বা বিশেষ ভাবনা এবং তোমার বৈশিষ্ট্য অন্যের মতো হবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১