Nullbloger seo ওয়েবসাইটের পেজ স্পিড কি? এবং SEO এর জন্য এর গুরুত্ব কতটূকু!
শুরু করার আগে জেনে নিতে চেষ্টা করব
ওয়েবসাইটের পেজ স্পিড কি? এবং SEO এর জন্য এর গুরুত্ব কতটূকু!
মনে করুন, আপনি প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাবেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আপনার কাছে তিন'টি অপশন আছে। বাস, রেল এবং বিমান। আমরা জানি, এই তিন'টি বাহনের মধ্য বিমানের গতি অন্য দুইটা বাহনের চেয়ে ও অনেক অনেক গুণ বেশি। যদি কখনো এমন হয় যে, গাড়ি এবং রেলের ভাড়ার চেয়েও কম খরচে বিমানে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়া যাবে। তাহলে আপনি কোন্ বাহন'টি বেছে নিবেন, নিশ্চয় বিমান। ঠিক তদ্রুপ, আপনি যখন ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্রয়োজনে ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন, তাহলে আপিনিও নিশ্চয় এমন ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে চাইবেন, যেটা খুব দ্রুত ওপেন হয়। কারণ, খুলতে অনেক সময় নেয়, এমন ওয়েবসাইট প্রথমত বিরক্তকর, দ্বিতীয়ত ব্যান্ডউইথ খরচ বাড়িয়ে দেয়। সুতারাং কচ্চপ গতিতে চলা ওয়েবসাইটে কেউ ভিজিট করতে চাই না। আর ভিজিটর যদি ওয়েবসাইট ভিজিট না করে তাহলে, ওয়েবসাইটের জন্য যত রকম SEO করুন না কেন, কাজের কাজ কিছুই হবে না। এই কারণে সম্প্রতি গোগলের পক্ষ থেকে পেজ স্পিডকে SEO এর জন্য নতুন ফেক্টর বলে গণ্য করা হয়েছে। গুগলের মতে ৩ সেকেন্ডের মধ্যে যদি একটি ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ লোড নিতে সক্ষম না হয়, তাহলে সেই ওয়েবসাইট ৩০% ভিজিটর হারায়। অর্থাৎ লোডিং টাইম ৩সেকেন্ডের বেশি হলে, প্রতি তিন জনের একজন ভিজিটর বিরক্তবোধ করেন। সুতারাং SEO এর জন্য লোডিং টাইম অনেক বড় ইস্যু। তাই পেজের লোডিং টাইম দুই এক সেকেন্ডের মধ্য নিয়ে আসুন। গুগলের এলগরিদম এমনভাবে করা হয়েছে, যেখানে একজন ভিজিটর ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় যদি ঢুকতে না পারে তাহলে সেটা ব্ল্যাকলিষ্টিং করে সার্চে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। ফলে অনেক ভালো কন্টেন্ট থাকা স্বত্বেও আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে আসে না এবং জনপ্রিয় হয় না। আমি এখানে সেরা এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ১০টি টিপস সম্পর্কে আলোচনা করেছি, যে গুলির যথাযত প্রয়োগ আপনার পেজ স্পিডকে সময়ের গতিতে নিয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ।
১ চলুন ওয়েবসাইটের গতি পরিক্ষা করি |
একজন ভাল ডাক্তারকে যেমন ঔষুধের ডেসক্রিপশন লেখার আগে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হয়, ঠিক তেমনি ভাবে ওয়েবসাইটের কোন একটি সমস্যা সমাধান খুজে বের করার জন্য সর্ব প্রথম সমস্যা গুলো কি কি আগে সেটা জানা একান্ত জরুরী। তাই, আগে আপনার ওয়েব পেজকে পরিক্ষা করে দেখুন কোথায় কি কি সমস্যার কারণে ওয়েব পেজের গতি কম হচ্ছে। অনলাইনে ওয়েব পেজের গতি নির্ণয় এবং সমস্যা গুলো দেখার জন্য অনেক টোল বা ওয়েবসাইট আছে। আমি এখানে তিনটা ওয়েবসাইটের লিংক দিলাম, যেটা ব্যবহার করতে আপনার সহজ মনে হয় ব্যবহার করতে পারেন। GTmetrix |
২।। সবসময় উন্নত হোষ্টিং ব্যবহার করুন |
অনেকেই আছেন যারা সস্তা দামে হোষ্টিং কিনে কষ্ট পাচ্ছে। কারণ, কমদামী ওভারলোড হোষ্টিং ওয়েবসাইটের স্পিড স্লো হয়ে যায়। ফলে ভিজিটর বিরক্ত হয়ে এসব ওয়েবসাইটে আর ভিজিট করে না। ধীরে ধীরে SEO রেংকিং পেছনে চলে যায়। তাই, হোষ্টিং কেনার সময় সতর্ক থাকুন। মূল্য কিছুটা বেশি হলেও উন্নত মানের হোষ্টিং ক্রয় করুন। বিশেষ করে শেয়ার হোষ্টিং ক্রয় না করাই উত্তম। আমার কাছে namecheap এবং GoDaddy এদের হোষ্টিং ভাল লেগেছে।তবে এক্ষেত্রে আপনি আপনার সেরাটা বাছাই করুন। |
৩।। HTTP এর দিকে নজর রাখুন request সংখ্যা হ্রাস করুন |
||
HTTP
Requests কি, যারা জানে না, তাদের জন্য বিস্তারিত বুঝাতে গেলে সেটার জন্য আলাদা
একটি টিউটোরিয়াল করতে হবে। তবে, সংক্ষেপে কিছুটা আইডিয়া দেবার চেষ্টা করছি। মনে
করুন, আমি আমার লেপটপ বা আমার ব্রাউজার থেকে, গুগল সার্চ বক্সে
"nullblogger.com" কী-ওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করলাম।
অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করার অর্থ হচ্ছে, সার্ভারে আমি একটি অনুরুধ পাঠালাম। আমরা
জানি, সার্ভারের কাছে যখন কোন রিকোয়েষ্ট যায়, সেটা অবশ্যই http ফর্মে যায়। তাই
সার্ভারে কোন কিছুর জন্য অনুরুধ পাঠানোর এই প্রসেসিং'কে http requests বলা হয়।
কেউ কেউ এটাকে http servlet request বলে থাকে কারণ, তখন রিকোয়েষ্ট যাবে ওয়েব
কম্পোনেন্ট হয়ে সার্ভলেট মেশিন অথবা ডাটাবেজে। সার্ভালেট মেশিন দ্বারা অনুসন্ধান
করা যত গুলি কী-ওয়ার্ড সেখানে পাওয়া যাবে, সকল কী-ওয়ার্ড এর সাথে সম্পর্কিত সব
কিছুই গোগল রেজাল্ট পেজে দেখানো হবে। সার্ভারের কাছে দেওয়া একটি রিকোয়েষ্টের
ফলাফল পাওয়া, এই প্রসেসিংকে http servlet response বা http response বলা হয়। এক
কথায়, একজন ক্লাইন্টের কাছ থেকে সার্ভারে একটি অনুরুধ যাওয়াটাকে HTTP Requests এবং
অনুরুধ অনুযায়ী ফলাফল পাওয়াটাকে http response বুঝানো হয়। আরো পড়ুনঃ
১। কিভাবে নিজের একটি Android অ্যাপ তৈরি করবেন? ২।ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা কিছু উপায় ৩।ফ্রি অনলাইন প্রুফরিডিং টুলস যা গ্রামার ও বানান চেক করার জন্যে ব্যবহার করা হয় ৪। ডায়নামিক রাউটিং (OSPF) কি এবং কিভাবে কাজ করে জানুন
|
||
৫।। সকল কোড এবং ফাইলগুলো মিনিফাই করুন |
||
আমরা
যখন ওয়েব ডিজাইন করার জন্য কোড লিখি, তখন সকল কোডের মাঝে অপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু
স্পেস বা খালি জায়গা থেকে যায়। স্পেস রাখা হয় মুলত কোড গুলোকে স্পষ্ট দেখার
জন্য। যদি কোথাও এডিট করার প্রয়োজন হয় সহজে কোড খঁজে পাওয়ার জন্য। কিন্তু, এইসব
স্পেস আপনার ওয়েব পেজের গতি কমিয়ে দেয়। সুতারাং ফাইনালী আপনার ওয়েব ডিজাইন যখন
শেষ করবেন, তখন কোডের মাঝে থাকা সকল স্পেস গুলোকে তুলে সব কোডকে একত্রিত করে
নিবেন। কোড বলতে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট সহ যত গুলো কোড আপনার ওয়েব
পেজে ব্যবহার হয়েছে, সব গুলোকে মিনিফাই করে নিবেন। সহজে কোড মিনিফাই করার জন্য
এই টোলটি ব্যবহার করতে পারেন। Minify Code. |
৬ সঠিক ফরম্যাটে কোডিং করুন |
|
অনেক ওয়েবসাইট টেমপ্লেটের জন্য সঠিক ফরম্যাটে কোডিং না করার কারণে ওয়েব পেজের লোডিং টাইম বেড়ে যায়, বিশেষ করে পাইরেটেড থিম বা টেমপ্লেট গুলোতে স্ট্যান্ডার্ড কোডিং ব্যবহার না করার কারনে ওয়েবসাইট লোডিং টাইম বেড়ে যায়। তাই ওয়েব টেমপ্লেট বানানোর সময় সঠিক ফরম্যাটে কোডিং করুন। বিশেষ করে, ডুপিলিকেট আইডি অর্থাৎ একই নামে একাধিক আইডি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। তবে একই নামে একাধিক ক্লাস ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রোগ্রামিং ভাষার ক্ষেত্রে সঠিক কোডিং পদ্ধতি আগে ভাল করে জেনে নিন, পরে কোড করুন। এটি ওয়েবসাইট বানাবার আগের প্রসেসিং হলেও পেজ লোডিং এর ক্ষেত্রে এটি জানা প্রয়োজন আছে তাই জানালাম। তবে এটি বড় ধরনের কোন কাজ নয়, প্রথমে আপনার ওয়েব পেজের সকল কোড গুলোকে কপি করে HTML Validator এই টোলের মাধ্যেমে ভালিডেশন করে নিন। কোডের মাঝে কোথাও কোন রকম ত্রুটি থাকলে সে কোডটুকু হাল্কা অরেঞ্জ রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখাবে। পড়ে দেখুন এবং ঠিক করে নিন। আর কোড ফরম্যাট করার জন্য HTML Formatter এই টোলটি ব্যবহার করুন। |
৭ লিভারেজ ব্রাউজার ক্যাশিং ফিক্স করুন |
আপনি যখন পেজ স্পিড পরিক্ষা করবেন তখন কি কি কারণে পেজ স্পিড কম হচ্ছে সেটার কয়েকটি কারণ দেখানো হবে, তার মধ্য অন্যতম একটি হচ্ছে Leverage browser caching. এখানে সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদীর লিংক দেখতে পাবেন। এগুলি হয়তো আমাদের ওয়েব পেজের প্রয়োজনীয় কিছু কন্টেন্ট। তাই এগুলিকে মুচে দেওয়া যাবে না, কিন্তু এগুলির কারণে যে পেজ লোডিং টাইম বেশি হচ্ছে, সেটাকে কিভাবে মোডিফাই করা যায় তার একটি সেরা উপায় এখানে দেখানো হল। নিচের এই কোড কপি করে যে ফোল্ডারে আপনার ওয়েব পেজ রাখা হয়েছে, একই ফোল্ডারে .htaccess নামে একটি ফাইল বানিয়ে পেষ্ট করে সেভ করে দিন। |
<IfModule mod_expires.c> ExpiresActive On
# Images ExpiresByType image/jpeg "access plus 1 year" ExpiresByType image/gif "access plus 1 year" ExpiresByType image/png "access plus 1 year" ExpiresByType image/webp "access plus 1 year" ExpiresByType image/svg+xml "access plus 1 year" ExpiresByType image/x-icon "access plus 1 year"
# Video ExpiresByType video/mp4 "access plus 1 year" ExpiresByType video/mpeg "access plus 1 year"
# CSS, JavaScript ExpiresByType text/css "access plus 1 month" ExpiresByType text/javascript "access plus 1 month" ExpiresByType application/javascript "access plus 1 month"
# Others ExpiresByType application/pdf "access plus 1 month" ExpiresByType application/x-shockwave-flash "access plus 1 month" </IfModule> |
৮ Gzip compression সক্রিয় করুন |
প্রথমে এই ওয়েবসাইটের এই টোলটি Gzip Compression ব্যবহার করে আপনার ওয়েব পেজের জেজিপ কম্প্রেশন সক্রিয় আছে কিনা যাচায় করে দেখে নিন। যদি না থাকে তাহলে নিচের এই কোড কপি করে যে ফোল্ডারে আপনার ওয়েব পেজ আছে সেই একই ফোল্ডারে .htaccess নামে একটি ফাইল বানিয়ে পেষ্ট করে সেভ করে নিন। আর আগে থেকে যদি অন্য একটি .htaccess ফাইল থাকে তাহলে সেখানে এই কোড কপি করে পেষ্ট করে দিন। Gzip compression সক্রিয় থাকলে পেজ লোডিং সময়ে সার্ভারের উপর লোড কম পড়ে বলে আপনার পেজ দ্রুত লোড হবে। |
# BEGIN GZIP <IfModule mod_deflate.c> AddOutputFilterByType DEFLATE text/html text/plain text/xml AddOutputFilterByType DEFLATE text/css AddOutputFilterByType DEFLATE application/x-javascript AddOutputFilterByType DEFLATE application/javascript AddOutputFilterByType DEFLATE image/jpg AddOutputFilterByType DEFLATE image/jpeg AddOutputFilterByType DEFLATE image/png AddOutputFilterByType DEFLATE image/gif </IfModule> # END GZIP |
৯ অপ্রয়োজনীয় প্লাগিন সরিয়ে নিন |
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা অপ্রয়োজনীয় কিছু প্লাগিন ইনষ্টল করে ফেলি, যা পরে হয়তো মনেও থাকে না। তাই আমার রিকোয়েষ্ট হচ্ছে যে, আপনার ওয়ার্ডপ্রেস পানেলে গিয়ে সকল প্লাগিন পুনরায় আরেকবার দেখে নিন, যদি মনে হয় কোন একটি প্লাগিন আপনার তেমন কোন কাজের নয় তাহলে সেটাকে আনইষ্টল করে নিন। কারণ প্লাগিন যত বেশি থাকবে পেজ স্পিড তত কমে যাবে। আর আপনার পেজের যত সিএসএস লিংক থাকবে সকল লিংক হেড সেকশনে রাখুন, অথবা ইন্টারনাল কোন সিএসএস থাকলে সেটাকে হেড শেকশনে রাখুন। আর যত জাভাস্ক্রিপ্ট বা জাভাস্ক্রিপ্ট লিংক থাকবে সব কিছুই ফুটার সেকশনে রাখুন। |
১০ সম্ভব হলে CDN ব্যবহার করুন |
CDN বলতে Content Delivery Network বুঝানো হয়। অর্থাৎ এটি এমন একটি নেটওয়ার্ক যা আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টকে ভিন্ন ভিন্ন দেশের নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ ঘঠিয়ে খুবই দ্রুত ডেলিভারী দিতে সহয়তা করে। ফলে আপনার ওয়েব পেজ অতি দ্রুত লোড হয়। তবে, CDN ফ্রিতে পাওয়া যায় না, কিনে নিতে হয়। তাই বলছি, যদি সম্ভব হয় তাহলে CDN ব্যবহার করুন। তবে আপনার ভিজিটর যদি শুধুমাত্র বাংলাদেশ বা এশিয়া বিত্তিক হয় তাহলে CDN ব্যবহার না করলে ও চলবে। |
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url