আর্টিকেল লিখে আয় করার শর্ত।।কন্টেন্ট রাইটার ফ্রিল্যান্সিং জব।।
নিঃসন্দেহে আর্টিকেল লেখার মূল বিষয়গুলো কেউ কাউকে শিখিয়ে দিতে পারে না। একটি বিষয়ে যদি কারো গভীর জ্ঞান থাকে সহজাতভাবেই সে সেই বিষয়ে অন্যদের চেয়ে ভালো লিখতে পারবে। শিখতে হবে পাঠকের কাছে কিভাবে পৌছানো যায় এবং পাঠক ধরে রাখা যায়।
আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে যদি আপনি যদি প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান। অথবা, যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং করে বা, নিজের ব্লগের জন্য লিখে আয় করতে চান তাহলেও কিছু বিষয় জানা দরকার।
আর্টিকেলটির বিশেষ কীওয়ার্ড
ব্লগ লিখে আয় করুন
ব্লগ লিখার শর্ত
ব্লগ শুরুর গাইড
*আর্টিকেল রাইটিং জব কোথায় পাবো?
বেশীরভাগ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসেই আর্টিকেল রাইটিং জব পাওয়া যায়। এছাড়া, বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইটে ব্লগের মাধ্যমে কাস্টমারদের আকৃষ্ট করা হয়। তাই, কোম্পানির ওয়েবসাইটের ব্লগে আর্টিকেল লেখার জন্য ওদের কাছে ইমেল করেও কাজ পেতে পারেন।
এছাড়া নিজের কোন নিশ ব্লগ তৈরি করেও আয় করা যায়। দক্ষতা থাকলে আয় করাটা কোন সমস্যা না। অন্য কারো উপর নির্ভর না করে, নিজে একটি ব্লগ তৈরি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং বা, গুগল এডসেন্স, Ezoic ইত্যাদি নানারকম এড দেখিয়ে আয় করা যাবে।নিজের ব্লগে আয় করার জন্য এস ই ও জানা দরকার।
*মোট ৩ ভাবে পাবেন-
- মার্কেটপ্লেসে- Fiverr, Upwork, Freelancers ইত্যাদি
-
- সরাসরি Buyer এর সাথে যোগাযোগ করে
-
- নিজেই নিজেকে চাকরি দিয়ে মানে, নিজের ব্লগে
যেকোন ধরণের আয়ের জন্য আপনাকে জানতে হবে কোন ধরণের লেখার প্রতি পাঠকের আগ্রহ আছে, এবং কিভাবে লিখলে তারা তা মনোযোগ দিয়ে পড়বে। এরপর আপনার যদি ঐ বিষয়ে in depth knowledge থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে সবার চেয়ে ভালো লিখতে পারবেন। না থাকলে প্রচুর পড়তে হবে।
এভারেজ মাণের লিখে কিছু হবে না, সবার চেয়ে ভালো হতে হবে(অনলাইনে যা আছে তাঁর চেয়ে ভালো)। এমন অনেক বিষয় আছে যে বিষয়ে অনলাইনে কিছুই নেই। আবার, এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলোতে জঘণ্য কিছু লেখা প্রথম পাতায় আছে। আপনার খুব বেশী জ্ঞান না থাকলেও এগুলোর চেয়ে ভালো লিখতে পারবেন। তাই, Expert হতে হবে এমন কোন কথা নেই।
*আর্টিকেল লেখার নিয়ম- লিখতে হলে জানতে হবে
নিয়ম মেনে আর্টিকেল লিখুন
যদি প্রফেশনাল লেখালেখির আগ্রহ না থাকে তাহলে এগুলো না জানলেও চলবে। আবার, আপনি যদি কোন বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক হোন তাহলে আপনার নাম দেখেই লোকে পড়বে।
অন্যথায়, লেখা দিয়ে পাঠককে বুঝাতে হবে, এই লেখার পুরোটা পড়া আপনার নিজের জন্য দরকার। পাঠকের চাওয়া সব তথ্য যদি আপনার আর্টিকেলে দিতে পারেন, তাহলে যেকোন বিখ্যাত লেখা বাদ দিয়ে আপনার লেখা পড়বে।
ব্লগের আর্টিকেল লিখতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চললে ভালো হয়, যা একাডেমিক রাইটিং এর চেয়ে আলাদা। নিঃসন্দেহে একাডেমিক রাইটিং ভালো পারলে ঐ বিষয়ে সে একটি ব্লগেও ভালো লিখতে পারবে। নিজের ব্লগের জন্য লিখতে চাইলে অন পেজ এস ই ও সম্পর্কে জেনে নিন।
প্রফেশনাল আর্টিকেল লেখার জন্য আপনাকে সাধারণত তিনটি বিষয় বলে দেয়া হবে–
- ফোকাস কিওয়ার্ড এবং রিলেটেড কিওয়ার্ড
-
- আর্টিকেল কত শব্দে হবে- ১৫০০+ বা, ২৫০০+ যাই হোক
-
- আর্টিকেলের উদ্দ্যেশ্য কি
মূল বিষয়গুলো না জানলে তাঁর লেখার চেয়ে বাজে লেখার মূল্য বেশী হতে পারে। চলুন দেখে নেই-
প্রচুর পড়তে হবে
সাধারণভাবে বলা হয় ১ পাতা লিখতে হলে কমপক্ষে ১০ পাতা পড়া দরকার। তাই, নতুন বিষয়ে লেখার আগে গুগলে সার্চ দিলে যা আসে তাঁর প্রথম পাতার ১০ টি লেখায় চোখ বুলানোটা দরকার। এরপর আপনি অনেক কিছু শিখে যাবেন।
- আগে পড়া থাকলে চোখ বুলান
-
- না পরা থাকলে মনোযোগ দিয়ে অন্তত ৫ টা লেখা পড়ুন, বাকি ৫ টাতে চোখ বুলান
-
- ফাঁকিবাজি করতে চাইলে লেয়াউট অনুযায়ী সেরা লেখা থেকে ছোট ছোট অংশ Rewrite করুন, কপি নয়
জানলেও পড়া উচিত। হয়তো একটি বিষয়ে আপনি আগেই অনেক পড়েছেন। কিন্তু এখন লেখার লেআউট ঠিক করার জন্য হলেও প্রথম পাতার সার্চ রেজাল্টের লেখাগুলো পড়া দরকার।
*লেখার লেআউট ঠিক করতে হবে
আপনি যখন প্রথম পাতায় সার্চে আসা সবগুলো লেখা পড়ে ফেলবেন, তখন বুঝতে পারবেন আপনাকে কতগুলো এরিয়া কাভার করতে হবে। এছাড়া গুগোল সার্চ সাজেশনে নিচের দিকে কিছু রিলেটেড সার্চ টার্ম লেখা থাকে।
সেই সাজেশনে দেখানো সার্চ টার্মগুলো কপি করে নেবেন, পরে আর্টিকেলে ব্যবহার করতে হবে। মানে গুগল চায় আপনি ঐ বিষয় গুলো নিয়েও লিখুন। ভিজিটরেরা মূল কিওয়ার্ড এর পাশাপাশি সাজেশনে দেখানো বিষয়গুলোও জানতে চায়।
লেআউট এরকম হবে-
- ফোকাস কিওয়ার্ড বেজড আর্টিকেল হবে
-
- অন্যরা যা নিয়ে লিখেছে তার সবকিছু নিয়ে লেখা থাকবে
-
- রিলেটেড কিওয়ার্ড গুলো সাব হেডিং এ দিয়ে সেগুলো নিয়েও লিখতে হবে
যদি নিজের ব্লগের জন্য করতে চান তাহলে কিওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে নিজেও ফোকাস কিওয়ার্ড আর, রিলেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে নিয়ে নিচের পদ্ধতিতে লিখতে পারবেন।
অনেক ক্ষেত্রে রিলেটেড কিওয়ার্ড সাব হেডিং এ দিলে লেখা ন্যাচারাল মনে হয় না। সেক্ষেত্রে লেখার মাঝে Sentence এ ব্যবহার করতে হবে। এই বিষয়গুলোকে মূল ভিত্তি মেনে নিজের মতো করে সাজিয়ে লিখুন।
*SEO আর্টিকেল লেখার নিয়ম মানতে হবে
সাধারণত ক্লায়েন্টের জন্য লিখলে আর্টিকেল লেখার নিয়ম বলতে সে আপনাকে Yoast বা, Rankmath ফলো করতে বলবে। সেটা আপনাকে ফলো করতে হবে। SEO এবং Readability দুইটাই জরুরি। চলুন দেখে নেই কি কি মানতে হবে-
ছোট ছোট Sentence এ লিখতে হবে, ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ থাকবে
সহজ ভাষায় লিখতে হবে যাতে ইংরেজী কম বুঝলেও পড়া যায়
ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে, হেডিং, টাইটেল, প্রথম প্যারাগ্রাফ, ১/২ টি সাব হেডিং, ইমেজ Alt ট্যাগে এবং শেষ প্যারাগ্রাফেIn addition, Therefore, So, Firstly, Secondly এইগুলো ব্যবহার করতে হবে। এগুলো লেখাকে Readable করেটাইটেলে নাম্বার এবং পাওয়ার ওয়ার্ড দিতে হবে। যেমনঃ Effective, Amazing, Free এইগুলো
*রিলেটেড কিওয়ার্ড যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে
টাইটেলে পাওয়ার ওয়ার্ড দিলে সার্চ রেজাল্টে ঐ লেখা মানুষ বেশী ক্লিক করে পড়ে। এস ই ও এর মূল বিষয় হচ্ছে সবগুলো বিষয় ঠিকঠাকমতো লেখা হচ্ছে কি না। আর পুরো আর্টিকেলটা একটি থীম মেনে লেখা হচ্ছে কি না। ফোকাস কিওয়ার্ডই হবে আপনার আর্টিকেলের থীম। জেনে নিন- পুরাতন আর্টিকেলের এস ই ও সম্পর্কে
*বিড ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কাজ
লেখাকে আকর্ষণীয় করতে হবে
আকর্ষণীয় লেখা পাঠকেরা বেশী আগ্রহ নিয়ে পড়ে। যেকোন ব্লগের লেখার ক্ষেত্রে ভিউ ডিউরেশন এবং বাউন্স রেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোন লেখা যদি পাঠক একবার দেখে চলে যায়, তাহলে সেটি ব্যর্থ লেখা। এজন্য যা করা যেতে পারে-
- লেখার মাঝে ছবি ব্যবহার করতে হবে
-
- হেডিং, সাব হেডিং, বুলেট পয়েন্ট, ইটালিক, বোল্ড এগুলো ব্যবহার করতে হবে
-
- প্রয়োজন হলে ভিডিও বা, ইনফোগ্রাফিক ব্যবহার করতে হবে, জোর করে না
-
- ছোট ছোট বাক্যে ছোট প্যারাগ্রাফে লিখতে হবে
এছাড়া কখনোই মূল বিষয় থেকে সরে আসা যাবে না। চেষ্টা করতে হবে লেখার বিষয়ের গভীর থেকে ব্যাখ্যা করতে এবং তা হবে একদম সহজ ভাষায়। আপনার পাঠক খুব ভালো লেখা দেখলেই পড়বে না, সহজে বুঝতে পারলে পড়বে।
*লেখা শেষে সংশোধন করতে হবে
প্রতিটি লেখায় ভুল হয়। তাই, লেখা শুরু করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফোকাস কিওয়ার্ড দেখে মনে মনে লেআউট তৈরি করে শুরু করে দিন। খুব দ্রুতই লেখা শেষ হয়ে যাবে। এরপর সব কিছু সহজেই সংশোধন করে নিতে পারবেন।
লেখার ভুল নিয়ে মোটেও বিচলিত হবেন না। আপনার ইচ্ছামতো লিখে যান। এরকম সংশোধন করতে করতে এক সময় দেখবেন আপনিও এক সময় একজন Expert আর্টিকেল রাইটার হয়ে গেছেন।
*ফ্রিল্যান্স আর্টিকেল রাইটিং
ফ্রিল্যান্সিং জবের মধ্যে আর্টিকেল রাইটিং খুব সুবিধাজনক একটি পেশা। কারণ, আপনার যে ক্লায়েন্ট আপনার কাজে সন্তষ্ট হবে, আশা করা যায় যে সে সারাজীবন আপনাকে নতুন অর্ডার দেবে। কারণ, আর্টিকেল সব সময় কাজে লাগে।
এক্ষেত্রে নিজের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ক্লায়েন্টকে সন্তষ্ট করা। বিভিন্ন ক্লায়েন্টের চাহিদা বিভিন্নরকম থাকে। যেমনঃ
SEO Tool দিয়ে আর্টিকেল লিখলে ভালো র্যাংক করবে এমন কোন কথা নেই, কিন্তু ক্লায়েন্ট চায়
- কেউ আপনার কাছ থেকে Native দের মতো ইংরেজী চাইবে
-
- আর্টিকেল সব সময় ইউনিক লিখতে হবে
-
- কখনোই কাজে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করবেন না, না পারলে করার দরকার নেই
-
- যা প্রতিশ্রুতি দেবেন তাঁর চেয়ে কিছুটা বেশী দিবেন সব সময়
ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলাতেও লেখা যায়। অনেক ফেসবুক গ্রুপ এবং ওয়েবসাইট আছে যারা বাংলা আর্টিকেল লেখার জন্য টাকা দেয়। আর্টিকেল রাইটিং পেশা হতে পারে। তবে, আমি সাজেস্ট করবো, পারলে ইংরেজীতেই লিখুন।
*ফ্রিতে শিখতে চানঃ
তাহলে, এডমিনের কাছে মেসেজ পাঠান। মেনুতে দেখবেন বার্তাকক্ষ নামে একটি অপশন আছে। সেখান থেকে এডমিনে কাছে মেসেজ পাঠান যে আপনি ফ্রি আর্টিকেল লিখতে চান এবং শিখতে চান।এবং Nullblogger।।ছাত্রনেটওয়ার্ক এর সাথে আর্নিং করতে চান তাহলে আপনাকে টপিক দেয়া হবে এবং গাইড দেয়া হবে।
৩/৪ টা আর্টিকেল লিখলেই বেসিক বিষয়গুলো শিখে যাবেন। এরপর ইংরেজী পারলে মার্কেটপ্লেসেও কাজ করতে পারবেন। যেকোন বিষয়ের জ্ঞান বাড়িয়ে ব্লগে নিয়ে সেই বিষয় নিয়ে লিখতে পারবেন।
পেইড কোর্স করতে চানঃ আমার মনে হয়, প্রফেশনালি কিছু শুরু করার আগে প্রফেশনাল একটি কোর্স করে নেয়া দরকার। প্রথম আলোর ফিচার রাইতাঁর প্রিয়ম মজুমদারের একটি ওয়েবিনার থেকে মূল বিষয়গুলো মাত্র ৩০০ টাকায় শিখে নিতে পারেন।
উনি বহুব্রীহিতে কোর্সটি দিয়েছেন। এখান থেকে জয়েন করুন। বেসিক বিষয়গুলো শেখা খুব সহজ। এরপর টপিকভিত্তিক জ্ঞান বাড়াতে পারলে ভালো ভালো কাজ পাবেন, অতি সাধারণ মাণের একটি আর্টিকেল লিখলেই ৩০০ টাকা পাবেন।
*ফ্রি গোপন ট্রিক্স
বাংলাতে খুব কম টাকা পাবেন, কারণ ওয়েবসাইটের Owner রাও বাংলা সাইটে অনেক কম টাকা পান, বলা যায় পান ই না। প্রেফেশনাল আর্টিকেল রাইটার হতে হলে বাংলাদেশীদের উচিত ইংরেজীতে লেখা। দক্ষতা না থাকলে শেখার চেষ্টা করুন, হয়ে যাবে।
২০০০+ শব্দের নিচে লেখা আর্টিকেলগুলো সহজে র্যাংক করে না। নিজের ব্লগে লিখলে এর চেয়ে বেশী শব্দে লেখার চেষ্টা করবেন। তাহলে, দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য পাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url