OrdinaryITPostAd

মোবাইল মেরামত শিখে ক্যারিয়ার গড়ুন, কি কি প্রয়োজন?

 


দেশে এখন মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখের মত৷ সেইসাথে নানা ধরনের কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের নিত্যনতুন চমক লাগানো প্রস্তাবনার কারণে দিন দিন ব্যবহারকারী গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ দেশে বর্তমানে নানা কোম্পানির মোবাইল সেট দেখতে পাওয়া যায়৷ যেমন- নকিয়া, সিমেন্স, মটোরোলা, এলকাটেল, স্যামসাং, সনি এরিকসন ইত্যাদি৷
পাশাপাশি যান্ত্রিক নানা সমস্যার সমাধানের জন্য চালু হচ্ছে অসংখ্য মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান৷ এতে করে দক্ষ মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ তাই এই পেশায় লাভের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে৷ চলুন এখন জেনে নেই একটি মোবাইল ফোন মেরামত করতে হলে আমাদের কি কি জেনে রাখা দরকার:




image-2






  • কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে সেট খুলে হাতে-কলমে সেটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সেটিং খোলা ও লাগানো৷
  • বাজারে এখন প্রায় প্রতিদিনই নানা ধরনের বাহারি ডিজাইনের সেট আসছে৷ এসব সেটের প্রায় প্রতিটিরই অপারেটর পদ্ধতি ভিন্ন ধরনের৷ তাই আমাদের এসব নতুন সেটের যন্ত্রাংশ সম্পর্কেও ধারণা থাকা দরকার৷
  • পাশাপাশি একটি সেটের আকার ও ধরন সম্পর্কেও জানা থাকা ভালো৷ তাই যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তারা প্রশিক্ষণ নেয়ার সময়ই দরকারি যন্ত্রপাতির নাম ও প্রাপ্তিস্থানের একটি তালিকা তৈরি করে নেবেন৷
  • প্রশিক্ষণ শেষে সুযোগ মত একটি স্থান নির্বাচন করে এমনকি এক রুমেরই একটি ঘর ভাড়া নিন৷ সেখানে মেশিনগুলো বসিয়ে সুন্দর পরিপাটি একটি অফিস খুলে শুরু করে দিন মোবাইল সেট মেরামত ব্যবসা৷ 
তথ্য সূত্র: দৈনিক সংবাদ (২০০৫: ৭ই জুলাই): অন্য জীবন৷

মোবাইল ফোন মেরামত ব্যবসা করার সুবিধা ও অসুবিধাগুলো কি কি

এই ব্যবসার সম্ভাব্য ক্রেতারা হলেন:
  • মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী
  • বাণিজ্যিক ফোন বুথ
  • নানা ধরনের ব্যবসায়ী
  • নানা সংস্থার কর্মী
  • চাকরীজীবি ও ছাত্র-ছাত্রী
এই ব্যবসার সবচেয়ে ইতিবাচক প্রভাব হলো যোগাযোগের ক্ষেত্রে৷ তাই ফোন কেনার সামর্থ্য না থাকলেও আপনি কমার্শিয়াল ফোন সার্ভিসের মাধ্যমে আপনার প্রয়োজনীয় যোগাযোগের কাজটি সেরে নিতে পারেন৷ আসুন এই ব্যবসার সুবিধা ও অসুবিধাগুলো জেনে নেই৷
সুবিধাসমূহ:
  • মোটামুটি কম পুঁজি ও মাত্র কযেক দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে এই ব্যবসা আপনি শুরু করেত পারেন৷ এক্ষেত্রে আপনি নিজে স্বাধীনমত কাজ করে যে আয় করবেন তার পুরোটাই আপনার নিজের৷
  • এই ব্যবসা করে আপনি একদিকে যেমন নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে পারবেন তেমনি অন্যদিকে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবেন৷
  • মোবাইল ফোন মেরামত ব্যবসা এমন একটি সেবামূলক কাজ যার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে৷ তাই এই ব্যবসায় আপনার আর্থিকভাবে ক্ষতি হবার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে৷
  • এই পেশায় দিন বা রাত যেকোনো সময় কাজ করা যায়৷ তাই আপনি যেকোনো সময়ই অর্থ আয় করতে পারেন৷
  • এমনকি বছরের প্রায় সব মাসেই মোবাইল ফোন মেরামত কাজের চাহিদা তেমন কমে না৷ তাই কর্মসংস্থানের এই সহজ পথটি যে কেউ বেছে নিতে পারে৷
  • এই ব্যবসায় অংশগ্রহণ করে নানা ধরনের প্রযুক্তিভিত্তিক ও কারিগরি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা যায়৷
  • সর্বোপরি এই ব্যবসার ভবিষ্যত্‌ বেশ উজ্জ্বল, তাই আপনি একে একটি স্থায়ী পেশা হিসেবেও গড়ে তুলতে পারেন৷
অসুবিধাসমূহ:
  • এই ব্যবসার জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট স্থান ও দোকানের প্রয়োজন হয় যা অনেক ক্ষেত্রে আপনি ভাড়ায় নাও পেতে পারেন৷
  • অনেক ক্ষেত্রেই মেরামতের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও দরকারি পার্টস বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতে পারে৷
এই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনি অবশ্যই এর ব্যবস্থাপনা, বিক্রয় এবং মুনাফা বা মূলধনের উপর ছোট আকারে আগাম একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নেবেন৷ ব্যবসার সাফল্য সাধারণত কম দামে যন্ত্রাংশ কেনা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কারিগর হিসেবে নিজেকে বা কর্মীদের তৈরি করা এবং সর্বোপরি এর যথাযথ বিক্রয় ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে৷ আপনাকে অবশ্যই ক্রেতার সমস্যা সম্পর্কে অবহিত থাকতে হবে৷
মোবাইল ফোন মেরামত করার ব্যবসায় কি ধরনের আয় বা খরচ হতে পারে আমরা এখন একটি আনুমানিক হিসাব নিয়ে এক মাসে এই ব্যবসায় আয় বা ক্ষতির ধরন কেমন হতে পারে তা জানার চেষ্টা করবো:
উপকরণ কেনার খরচ
উপকরণের নাম উপকরণের পরিমাণ একক দাম (টাকা) মোট খরচ (টাকা)
মোবাইল ২টি

সিমকার্ড ২টি

টুল বক্স (বড়) ১টি

টুল বক্স (ছোট) ১টি

চার্জার ২টি

তাতাল ১টি

তাতাল (সাধারণ) ২টি

টেবিল (বড়) ১টি

টেবিল (ছোট) ১টি

চেয়ার (বড়) ১টি

চেয়ার (ছোট) ৫টি

টেবিল লাইট ২টি


মোট টাকা



এই হিসাব অনুযায়ী চলতি খরচের খাত
খরচের খাত টাকার পরিমাণ
খুচরা পার্টস ক্রয়
অফিস ভাড়া
বিদ্যুত খরচ
টেলিফোন ও মোবাইল খরচ
কর্মচারীদের বেতন
আপ্যায়ন খরচ
যাতায়াত খরচ
অবচয়
ঋণের কিস্তি
মোট টাকা
এক মাসে আয়ের পরিমাণ
আয়ের খাত টাকার পরিমাণ
মোবাইল ফোন মেরামত সেবা দান বাবদ
প্রশিক্ষণ দান বাবদ
পার্টস বিক্রি বাবদ
মোট টাকা


পরিশেষে বলা যায় যে, এই ব্যবসায় প্রশিক্ষণের জন্য তেমন কোনো নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না৷ আপনার যদি এসএসসি, এইচএসসি বা ডিগ্রী - যেকোনো পর্যায়ের সার্টিফিকেট থাকে তাহলে আপনি এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন৷ শুধু চাকরিই নয় এই পেশায় রয়েছে আত্মকর্মসংস্থানেরও সুযোগ৷ সাধারণত দেশের মোটামুটি সব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানেই মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে দুই মাস থেকে এক বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু আছে৷ যেমন-



  • ডিপ্লোমা ইন মোবাইল সার্ভিসিং
  • পোস্ট ডিপ্লোমা ইন মোবাইল টেলিকম ইঞ্জিনিয়ারিং
  • পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন মোবাইল টেলিকম ইঞ্জিনিয়ারিং
  • মোবাইল ফোন রিপেয়ারিং ইত্যাদি৷
প্রতিষ্ঠান ভেদে এসব কোর্স সম্পন্ন করার ফি ৩,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে৷ আপনি সহজেই এগুলোর যেকোনো একটা বা যেটা আপনার জন্য প্রয়োজনীয় মনে হয় সেই কোর্স করতে পারেন৷

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১