OrdinaryITPostAd

উন্নত মানের পিসি কনফিগারেশন নিয়ে যত কথা

 



অনেকে আছেন যে নতুন পিসি কিনবেন কিন্তু পিসিতে কি কি লাগে এবং কোনটা কোনটা ভালো কিনতে হয় জানেন না । আবার অনেকে আছেন যে পিসি অনেকদিন ধরে ব্যবহার করছেন কিন্তু নতুন পিসি কিনবেন । তাদের জন্য মুলত এই পোষ্ট ।

একটা পিসিতে বেশ কিছু কম্পনেন্ট আছে যা ব্যবহার না করলে আপনার কম্পিউটার চলবে না । আবার অনেক কিছু আছে যার ব্যবহার আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে যে আপনি কি করতে চান আপনার কম্পিটার দিয়ে তার উপর নির্ভর করবে । যেমন একটা কম্পিউটার চলতে গেলে আপনার ব্যবহার করতেই হবে মাদারবোর্ড, প্রসেসর, র‍্যাম, হার্ড ডিস্ক, পাওয়ার সাপলাই, এবং সাথে ক্যাসিং যা আপনার কম্পিটারকে সুরক্ষা করার পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারকে করবে আকর্ষনিয় । তবে আপনি যদি আরো ভালো কিছু করতে চান আপনার কম্পিউটার দিয়ে যেমন গেমিং কম্পিউটার বানাতে চান অথবা আপনি বানাতে চান একটা ভিডিও এডিটিং কম্পিউটার সেই ক্ষেত্রে আপনাকে লাগাতে হবে গ্রাফিক্স কার্ড এবং গ্রাফিক্স কার্ডে পাওয়ার সাপলাই এর জন্য লাগাতে হবে উন্নতমানের রিকমেন্ডেট পাওয়ার সাপলাই । আর সাথে আপনার
CPU কে ঠান্ডা রাখার জন্য ব্যবহার করতে হবে উন্নতমানের কুলার । কুলারের মধ্যে এয়ার কুলার আছে এবং আছে ওয়াটার কুলার । আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে আপনার জন্য কোন কুলার ভালো হবে । আর আপনার সি.পি.ইউ.  এর সাথে যে কুলার থাকবে তা গেম এবং ভিডিও এডিটিং করতে আপনাকে ভালো পারফমেন্স দিবে না । তো এবার আসা যাক পিসি কনফিগারেশন নিয়ে আলোচনা, কোন পিসি এর জন্য নুন্যতম কি লাগবে ।

সাধারন ব্যবহারকারী
যারা সাধারনত অফিসের কাজ করবেন, অথবা শুধু শখে কপিউটার কিনতে চান, মাঝে মাঝে টুকটাক গেম খেলতে চান( হালকা মানের গেম ), এবং মুভি দেখে অবসর সময় কাটাতে চান এবং ইন্টার্নেট ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য মুলত এই অপশন । নরমাল ব্যবহারকারীদের জন্য যে যে কম্পোনেন্ট লাগবেই তা নিচে দেওয়া হল ঃ
১) প্রসেসর
২) মাদারবোর্ড
৩) র‍্যাম
৪) হার্ড ডিস্ক
৫) অপ্টিক্যাল ড্রাইভ (অপশনাল)
৬) পাওয়ার সাপলাই
৭) ক্যাসিং

আপনাদের প্রসেসরের সাথে যে সিপিইউ কুলিং ফ্যান দেওয়া হবে । আপনাদের কাজের জন্য যথেষ্ট । এবং এই কাজের জন্য নতুন করে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ফ্যান লাগানোর কোনো দরকার নেই । এতে শুধু শুধু আপনাদের টাকা নষ্ট হবে । এই কাজের জন্য সর্বোচ্চ Core i3 যথেষ্ট । অনেকে মনে করে থাকবেন যত বেশি প্রসেসর তত স্পিড । কিন্তু এসব নরমাল কাজে আপনি প্রসেসরের ব্যবহার বুঝতে পারবেন না । আর এখানে এত বেশী প্রসেসরের কোনো দরকার নেই । মাদারবোর্ডের ক্ষেত্রে একটু দেখে নিবেন । আপনি যদি ভবিষ্যতে গ্রাফিক্স কার্ড লাগাতে চান তাহলে মাদারবোর্ডে PCI-E 3.0 থাকতে হবে । কিন্তু যদি ভাবেন যে, আমি এমনি থাকব এবং সর্বোচ্চ এইটুকু কাজ করব তাহলে এত দামি মাদার্বোডের কোনো দরকার নেই । মাদারবোর্ডে সাউন্ড কোয়ালিটি, র‍্যাম এর স্লট ২ টা হলেই হবে এবং দেখতে হবে আপনার প্রসেসর যে সকেটে লাগবে সেই সকেটের মাদারবোর্ড নাকি । র‍্যাম আমি মনে করি এই কাজের জন্য, উইন্ডোজ, অফিস, বিভিন্ন সফটওয়ার এবং নরমাল গেম খেলার জন্য ৪ গিগাবাইটের বেশি র‍্যাম লাগবে না । হার্ড ডিস্ক আপনাদের ইচ্ছামত নিয়ে নিবেন । তবে খেয়ার রাখবেন যে, স্পিন স্পিড যেন ৭২০০ RMP হয় এবং ৩.৫ ইঞ্চি হার্ড ডিস্ক ডেস্কটপ কম্পিটারের জন্য বেশী ভালো । পাওয়ার সাপলাই ভালো হলে ভালো হয় । এই ক্ষেত্রে আপনি ক্যাসিং এর সাথে যে পাওয়ার সাপলাই থাকে এটার উপর নির্ভর করতে পারেন । অপ্টিক্যল ড্রাইভের কথা আমি অপশনাল বলেছি কারন এটা অনেকে লাগাতে পছন্দ করে আবার অনেকে লাগাতে চায় না । এটা ডিভিডি রোম, ডিভিডি চালানো অথবা ডিভিডি এর বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় এবং ক্যাসিং আপনার ইচ্ছামত সাইজ এবং পছন্দ মত দেখে নিতে পারেন ।


গেমিং কম্পিউটার ব্যবহারকারী
যারা টুকটাক গেম খেলেন কিংবা অনেক বেশী গেম খেলেন এবং সাথে অন্যান্য কাজ করেন তাদের জন্য মুলত এই অপশন । এ ক্ষেত্রে কম্পিউটারের কনফিগারেশন একটু আলাদা হবে । যা যা লাগবে তা আপনাদের নিচে দেওয়া হলঃ

১) প্রসেসর
২) মাদারবোর্ড
৩) র‍্যাম
৪) হার্ড ডিস্ক
৫) এস এস ডি স্টোরেজ (অপশনাল কিন্তু লাগালে ভালো )
৬) অপ্টিক্যাল ড্রাইভ (অপশনাল)
৭) গ্রাফিক্স কার্ড
৮) পাওয়ার সাপলাই (গ্রাফিক্স কার্ডে রিকমেন্ডেট অনুযায়ী)
৯) সিপিইউ কুলার
১০) ক্যাসিং

প্রসেসরের ক্ষেত্রে বর্তমান গেমিং এর জন্য আমি রিকমেন্ডেট করব সর্বোচ্চ Overclocked Core i5 পর্যন্ত । গেমিং এর জন্য এর থেকে বেশী লাগে না । তবে গেমিং এর জন্য আপনার গ্রাফিক্স কার্ড যত বেশী ভালো হবে আপনি গেম খেলে অত বেশী মজা পাবেন । তাই গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষেত্রে একটু বেশি খরচ করবেন । এবং গ্রাফিক্স কার্ডের রিকমেন্ডেট অনুযায়ী পাওয়ার সাপলাই লাগাতে হবে তবে যত ভালো মানের পাওয়ার সাপলাই লাগাতে পারেন লাগাবেন । এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভালো মানের ব্র্যন্ডের উপর নির্ভর করতে পারেন । গেমিং এর জন্য প্রসেসর এর সাথে যে এয়ার কুলার দেওয়া থাকে তা এড়াতে চেষ্টা করবেন । ভালো মানের এয়ার কুলার অথবা ওয়াটার কুলার এর উপর নির্ভর করবেন । এতে আপনার সিপিইউ বেশী ঠান্ডা থাকবে । র‍্যাম ৮ গিগাবাইট যথেষ্ট কিন্তু কেউ যদি আরো লাগাতে চায় তাহলে বর্তমানের গেমিং এর জন্য ১২ গিগাবাইট এবং গেম খেলা ছাড়াও যদি মাঝে মাঝে ভিডিও এডিটিং করতে চায় তাহলে ১৬ গিগাবাইট থাকলে ভালো তবে বাজেট কম হলে ৮ গিগাবাইটে কোনো সমস্যা হবে না । মাদারবোর্ডের জন্য আপনি আপনার প্রসেসরের সকেটের মডেল দেখবেন এবং সেই অনুযায়ী মাদারবোর্ড সিলেক্ট করবেন । গেমিং এর জন্য ওভারক্লোকেবল মাদারবোর্ড এবং র‍্যাম এর স্লট কমপক্ষে ৪ টা, সাউন্ড কোয়ালিট এবং হিট সিঙ্ক দেখে নিবেন । এবার আসি হার্ড ডিস্ক এর দিকে , এটা আপনাদের পছন্দ মত তবে আমার মতামত যদি নিতে চান তাহলে ২ টেরাবাইট এর কথা বলব কারনে গেম এর সাইজ বড় এবং বেশী জায়গা দিবে । এস এস ডি হল হার্ড ডিস্কের মত স্টোরেজ কিন্তু হার্ড ডিস্ক থেকে অধিক গতি সম্পন্ন । আপনার পিসিকে অনেক ফাষ্ট করে দিবে এবং খুব তাড়াতাড়ি কাজ করা যাবে । আপনার গেম তাড়াতাড়ি লোড হবে । রিকমেন্ডেট করব লাগানোর জন্য কিন্তু আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করবে পুরোটা । ক্যাসিং এর জন্য আমি বলব একটু বড় সাইজের গেমিং ক্যাসিং নেওয়ার জন্য কারন আপনার মাদার্বোর্ড এর সাইজ বড় হবে সাথে আপনার গ্রাফিক্স কার্ডের সাইজ বড় হবে । এবং ক্যাসিং এ যে এয়ার ইনপুট আউটপুটের ফ্যান থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখবেন ।


ভিডিও এডিটিং পিসি কনফিগারেশন
যারা প্রফেশনাল কিংবা নন প্রফেশনাল পিসি ভিডিও এডিটর তাদের জন্য এই অপশন । ভিডিও এডিটিং পিসি গেমিং পিসি থেকে একটু আলাদা হয় কিছু জিনিষ এবং সব থেকে বেশী বাজেটের পিসি হল ভিডিও এডিটিং পিসি । ভিডিও এদিটিং পিসি এর জন্য আপনাকে যে কম্পোনেন্ট ব্যবহার করতে হবে তা নিচে দেওয়া হলঃ
১) প্রসেসর
২) মাদারবোর্ড
৩) র‍্যাম
৪) হার্ড ডিস্ক
৫) এস এস ডি স্টোরেজ
৬) অপ্টিক্যাল ড্রাইভ (অপশনাল)
৭) গ্রাফিক্স কার্ড (NVidia GPU)
৮) পাওয়ার সাপলাই (গ্রাফিক্স কার্ডে রিকমেন্ডেট অনুযায়ী )
৯) সিপিইউ কুলার (ওয়াটার কুলার হলে বেষ্ট)
১০) ক্যাসিং

প্রসেসরের ক্ষেত্রে ভিডিও এডিটিং এর জন্য আমি রিকমেন্ডেট করব সর্বোচ্চ Overclocked প্রসেসর এর, যেমন core i7 (OC), Xeon, 6 core অথবা 8 coreপ্রসেসর এর কোড় এবং থ্রেড যত বেশী রেন্ডারিং তত স্পিডে হবে এবং আপনার কাজের সময় অনেক কমে যাবে । গ্রাফিক্স কার্ড যত বেশী ভালো হবে ততই ভালো, বর্তমানে ভিডিও এডিটিং এর জন্য আমি রিকমেন্ট করব Nvidia গ্রাফিক্স কার্ড কিনতে কারন Nvidia  তে আছে CUDA প্রসেসর যা আপনার 3d ray tracing রেন্ডারিং এর গতি বাড়িয়ে দিবে । তাই গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষেত্রে একটু বেশি খরচ করবেন । এবং গ্রাফিক্স কার্ডের রিকমেন্ডেট থেকে এক্তটু বেশি ওয়াটের পাওয়ার সাপলাই লাগাতে হবে তবে যত ভালো মানের পাওয়ার সাপলাই লাগাতে পারেন লাগাবেন । এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভালো মানের ব্র্যন্ডের উপর নির্ভর করতে পারেন । প্রসেসর এর সাথে যে এয়ার কুলার দেওয়া থাকে তা এড়াতে চেষ্টা করবেন । ভালো মানের এয়ার কুলার অথবা ওয়াটার কুলার এর উপর নির্ভর করবেন । তবে আমি রিকমেন্ট করব ওয়াটার কুলার লাগাতে কারন সিপিইউ বেশী গরম হয় রেন্ডারিং এবং অন্যান্য কাজ করতে । এতে আপনার সিপিইউ বেশী ঠান্ডা থাকবে । র‍্যম ৩২ গিগাবাইট লাগানো ভালো তবে বাজেট কম থাকলে ১৬ গিগাবাইটমাদারবোর্ডের জন্য আপনি আপনার প্রসেসরের সকেটের মডেল দেখবেন এবং সেই অনুযায়ী মাদারবোর্ড সিলেক্ট করবেন । ভিডিও এডিটিং এর জন্য ওভারক্লোকেবল মাদারবোর্ড এবং র‍্যাম এর স্লট কমপক্ষে ৪ টা, সাউন্ড কোয়ালিট এবং হিট সিঙ্ক দেখে নিবেন । এবার আসি হার্ড ডিস্ক এর দিকে , এটা আপনাদের পছন্দ মত তবে আমার মতামত যদি নিতে চান তাহলে কমপক্ষে ২ টেরাবাইট এর কথা বলব যা আপনাকে বেশী জায়গা দিবে । এস এস ডি হল হার্ড ডিস্কের মত স্টোরেজ কিন্তু হার্ড ডিস্ক থেকে অধিক গতি সম্পন্ন । আপনার পিসিকে অনেক ফাষ্ট করে দিবে এবং খুব তাড়াতাড়ি কাজ করা যাবে । আপনার ভিডিও এডিটিং এর রেন্ডারিং সহ অন্যান্য কাজ করবে খুব তাড়াতাড়ি রিকমেন্ডেট করব অবশ্যই লাগানোর জন্য  । ক্যাসিং এর জন্য আমি বলব একটু বড় সাইজের গেমিং ক্যাসিং নেওয়ার জন্য কারন আপনার মাদার্বোর্ড এর সাইজ বড় হবে সাথে আপনার গ্রাফিক্স কার্ডের সাইজ বড় হবে । এবং ক্যাসিং এ যে এয়ার ইনপুট আউটপুটের ফ্যান থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখবেন ।


আশা করি আপনারা আমার কথা বুঝতে পেরেছেন যদি তারপরেও কোনো সমস্যা অথবা বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে Contact Us অপশনে গিয়ে আমাদের আপনার সমস্যার কথা জানান ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১